বর্তমান সময়ে সারকোপেনিয়া একটি নীরব কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পেশিক্ষয়ের অবস্থা হিসেবে বিশ্বজুড়ে দেখা যাচ্ছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের পেশির ভর, শক্তি ও কার্যক্ষমতা কমে যায়—এটিই সারকোপেনিয়া। শুধু বয়স্কদের মধ্যেই নয়, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অপুষ্টি, দীর্ঘ সময় বসে থাকা ও ব্যায়ামের অভাবের কারণে তরুণদের মধ্যেও এর প্রভাব বাড়ছে। সারকোপেনিয়ার ফলে দুর্বলতা, চলাফেরায় সমস্যা, পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি ও দৈনন্দিন কাজ করতে অসুবিধা দেখা দেয়। তবে সঠিক জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস ও ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে সারকোপেনিয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
---
সারকোপেনিয়া কেন হয়? (Causes of Sarcopenia)
সারকোপেনিয়ার পেছনে রয়েছে কয়েকটি মূল কারণ—
বয়স বাড়ার সাথে সাথে পেশির ভর ও শক্তি কমে যাওয়া (Age-related muscle loss)
শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা (Sedentary lifestyle)
পর্যাপ্ত প্রোটিন ও পুষ্টি গ্রহণের অভাব
হরমোনাল পরিবর্তন (Testosterone, Growth hormone হ্রাস)
দীর্ঘমেয়াদে ক্রনিক রোগ যেমন ডায়াবেটিস, কিডনি ডিজিজ
ইনফ্ল্যামেশন ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস
অতিরিক্ত ওজন বা অপুষ্টি
---
সারকোপেনিয়ার লক্ষণ (Symptoms of Sarcopenia)
সারকোপেনিয়া ধীরে ধীরে শুরু হয়, তাই বেশিরভাগ সময় মানুষ বুঝতেই পারে না—
পেশির শক্তি কমে যাওয়া
হাঁটায় ধীরগতি বা দুর্বলতা
ভারসাম্য হারানো, হোঁচট খাওয়া বা পড়ে যাওয়ার প্রবণতা
দৈনন্দিন কাজ করতে সমস্যা (চেয়ার থেকে ওঠা, সিঁড়ি ভাঙা)
দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যাওয়া
পেশির আকার দৃশ্যমানভাবে ছোট হয়ে যাওয়া
---
সারকোপেনিয়ায় ফিজিওথেরাপির ভূমিকা
পেশি পুনরুদ্ধার, শক্তি বৃদ্ধি এবং দৈনন্দিন কার্যক্ষমতা উন্নত করতে ফিজিওথেরাপি সবচেয়ে কার্যকর।
১. Strength Training
Resistance Band Exercise
Dumbbell বা light-weight lifting
Progressive overload strength training
২. Functional Training
Sit-to-Stand
Step-up training
Gait training (নিরাপদ হাঁটার প্যাটার্ন)
৩. Balance & Coordination Training
Single-leg stance
Tandem walking
Balance board বা foam surface exercise
৪. Aerobic Exercise
হাঁটা, সাইক্লিং বা লো-ইম্প্যাক্ট কার্ডিও
২০–৩০ মিনিট, সপ্তাহে 4–5 দিন
৫. Pain & Fatigue Management
Hot pack
TENS (যদি পেশিতে ব্যথা থাকে)
Gentle stretching
৬. Lifestyle Education
পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ
সঠিক ঘুম
নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ
ব্যালান্সড ডায়েট ও হাইড্রেশন
---
সারকোপেনিয়া প্রতিরোধে করণীয় (Prevention Tips)
প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম
পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ (Fish, Egg, Milk, Pulses, Lean meat)
Vitamin-D ও Omega-3 সমৃদ্ধ খাবার
দীর্ঘসময় বসে থাকা পরিহার
স্ট্রেংথ ট্রেনিং সপ্তাহে অন্তত ২–৩ দিন
ফিজিওথেরাপিস্টের নিয়মিত পরামর্শ