গাউট আর্থ্রাইটিস: কী এবং কীভাবে হয়
গাউট আর্থ্রাইটিস হলো এক ধরনের প্রদাহজনিত আর্থ্রাইটিস, যা শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড জমে ক্রিস্টাল আকারে জয়েন্টে জমা হলে ঘটে। এটি সাধারণত হঠাৎ করে শুরু হয় এবং তীব্র ব্যথা, ফোলাভাব ও লালচেভাব দেখা দেয়।
সাধারণ কারণগুলো হলো:
শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের অতিরিক্ত উৎপাদন বা কম নির্গমন
উচ্চ পিউরিনযুক্ত খাবার (লাল মাংস, সি-ফুড, অ্যালকোহল) গ্রহণ
স্থূলতা ও হাইপারটেনশন
দীর্ঘমেয়াদী কিডনি সমস্যা
পরিবারে গাউটের ইতিহাস থাকা
---
গাউট আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ
হঠাৎ তীব্র জয়েন্ট ব্যথা (বিশেষত বড় আঙুলের গোড়ায়)
জয়েন্টে ফোলাভাব, লালচে বা গরম অনুভূতি
জয়েন্টে শক্ত হয়ে যাওয়া ও নড়াচড়া কমে যাওয়া
রাতের দিকে বা হঠাৎ আক্রমণ (Gout attack) শুরু হওয়া
---
ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে পুনরুদ্ধার
গাউট আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণে ও পুনর্বাসনে ফিজিওথেরাপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে:
আইস থেরাপি: প্রদাহের সময় ঠান্ডা প্রয়োগ ব্যথা ও ফোলাভাব কমায়
জয়েন্ট মোবিলিটি এক্সারসাইজ: নরমাল রেঞ্জ অফ মোশন বজায় রাখতে হালকা নড়াচড়া ব্যায়াম
স্ট্রেন্থেনিং এক্সারসাইজ: আশেপাশের পেশি শক্তিশালী করে জয়েন্টকে সাপোর্ট দেওয়া
লো ইমপ্যাক্ট এক্সারসাইজ: সাঁতার, সাইক্লিং জয়েন্টে চাপ না দিয়ে ফিটনেস বজায় রাখে
ইলেক্ট্রোথেরাপি: আল্ট্রাসাউন্ড বা TENS ব্যথা ও প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
---
সার্জারির প্রয়োজনীয়তা
সাধারণত গাউট আর্থ্রাইটিসে সার্জারি প্রয়োজন হয় না। তবে দীর্ঘদিন চিকিৎসা না করলে জয়েন্টে স্থায়ী ক্ষতি বা ইউরিক অ্যাসিড গাঁট (Tophi) তৈরি হলে সার্জারি লাগতে পারে।
---
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
পিউরিন কম খাবার খাওয়া (লাল মাংস, অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা)
পর্যাপ্ত পানি পান করা
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
নিয়মিত ব্যায়াম করা
ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে ওষুধ সেবন
---
উপসংহার
গাউট আর্থ্রাইটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহজনিত রোগ হলেও সঠিক চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে এর উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। জীবনধারায় পরিবর্তন, সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম গাউট নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।