বর্তমান সময়ে ঘাড়ে ব্যথা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠেছে, যা শুধু বয়স্করা নয়, অনেক তরুণও প্রায়শই অনুভব করে। দীর্ঘক্ষণ একটানা কম্পিউটার ব্যবহার, মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার, বা সঠিক ভঙ্গিমায় না বসার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। কখনো কখনো ব্যথা এত তীব্র হয় যে মাথা ঘোরায়, হাতে অবশভাব আসে বা দৈনন্দিন কাজে প্রভাব ফেলে। তবে সময়মতো চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে এ সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব।
ঘাড়ে ব্যথার সম্ভাব্য কারণগুলো
– ল্যাপটপ বা মোবাইল ব্যবহারের সময় ঘাড় ঝুঁকিয়ে কাজ করা
– ঘাড়ে হঠাৎ আঘাত বা টান লাগা
– সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস বা ডিস্কজনিত সমস্যা
– অনুপযুক্ত বালিশ বা ভুল ঘুমের ভঙ্গি
– মানসিক চাপের ফলে ঘাড়ের পেশি টানটান হয়ে যাওয়া
ঘাড়ে ব্যথার সাধারণ উপসর্গ
– ঘাড় ঘোরাতে সমস্যা বা অস্বস্তি অনুভব করা
– মাথাব্যথা বা ব্যথা কাঁধ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া
– হাতে বা আঙুলে ঝিন ঝিন ভাব, অবশভাব
– ঘাড়ে টান লাগা বা পেশি শক্ত মনে হওয়া
– একই ভঙ্গিতে অনেকক্ষণ বসে থাকলে ব্যথা বেড়ে যাওয়া
ফিজিওথেরাপি কীভাবে সাহায্য করে
ফিজিওথেরাপি ঘাড়ের ব্যথা উপশমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি ওষুধ ছাড়াই ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং সমস্যার মূল উৎসের উপর কাজ করে।
– হালকা হাতে জয়েন্ট ও পেশিতে চাপ প্রয়োগ করে ব্যথা হ্রাস
– গরম বা ঠান্ডা সেঁক ব্যথা ও ফোলাভাব কমায়
– TENS বা IFT থেরাপি ব্যথানাশক সিগনাল দিয়ে নার্ভ রিল্যাক্স করে
– স্ট্রেচিং ব্যায়ামের মাধ্যমে ঘাড়ের পেশির নমনীয়তা বাড়ানো হয়
– সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখতে পোশচার ট্রেনিং করানো হয়
প্রতিরোধমূলক কিছু পরামর্শ
– কাজ করার সময় সোজা হয়ে বসা
– প্রতি আধঘণ্টা পরপর ঘাড় নাড়ানো
– স্ক্রিন যেন চোখের সমান উচ্চতায় থাকে তা নিশ্চিত করা
– পর্যাপ্ত ঘুম ও সঠিক ধরনের বালিশ ব্যবহার
– মানসিক চাপ কমাতে রিল্যাক্সেশন ব্যায়াম করা
শেষ কথা
ঘাড়ে ব্যথাকে হালকাভাবে নিলে ভবিষ্যতে এটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় রূপ নিতে পারে। তাই শুরুতেই একজন ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নিয়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত সঠিক ব্যায়াম ও দৈনন্দিন জীবনে ভালো অভ্যাস গড়ে তুললে neck pain থেকে পরিপূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব।